মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার তাঁতপল্লীর কারিগরদের নিপুণ
হাতে তৈরি ঐতিহ্যবাহী তাঁতের শাড়ি, জামদানি, মনপুরা, সিল্ক, এন্ডি সিল্ক, হাফ সিল্ক, থ্রি পিস, থানকাপড় জনপ্রিয়
হয়ে উঠছে। এসব পণ্য দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ভারতসহ অন্যান্য দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এর ফলে
কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার লোকের। তাদের আর কাজের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় না।
একসময় মানিকগঞ্জের
সিংহভাগ লুঙ্গির চাহিদা মিটত সাটুরিয়া উপজেলার আগসাভার, চাচিতারা,
হামজা, দিঘুলিয়া, কায়াখোলা,
কলমাইল এলাকার তাঁতের তৈরি লুঙ্গি দিয়ে। কিন্তু সুতার মূল্য ও মজুরি বৃদ্ধিসহ
বিভিন্ন কারণে ২০০৪ সালে লুঙ্গি তৈরি
প্রায় বন্ধ করে দেন তাঁতিরা। তাঁতকলগুলো একে একে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁতিরা চোখে অন্ধকার দেখতে থাকেন।
এ অবস্থায় নতুন করে বেঁচে থাকার
জন্য তাঁতের শাড়িসহ তৈরি করেন সিল্ক, এন্ডি
সিল্ক, হাফ সিল্ক, থ্রি পিস, থানকাপড়।
প্রাচীনকাল থেকে সোনারগাঁর জামদানি, মিরপুরের
বেনারসি ও টাঙ্গাইলের
শাড়ির দেশ-বিদেশ প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
মানিকগঞ্জের শাড়ির মান টাঙ্গাইল শাড়ির মতো হওয়ায় পাইকারি
মহাজনেরা এদিকে ঝুঁকে পড়েন। ঘুরে যায়
এখানকার লুঙ্গি ব্যবসায়ীদের ভাগ্যের চাকা। একে একে সবাই শাড়ি তৈরি শুরু করে দেন। টাঙ্গাইলের বাজিতপুরের বসাক
মহাজনেরা নিত্যনতুন ডিজাইন অর্ডার
দিতে থাকেন। এরাও বেশি শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে বসাকদের চাহিদা মেটাচ্ছেন। মানিকগঞ্জের তৈরি সিল্ক, এন্ডি সিল্ক,
হাফ সিল্ক, থ্রি
পিস, থানকাপড়, শাড়িকাপড় দেশের বিভিন্ন অভিজাত বিপণিতে
টাঙ্গাইল মহাজনদের নামে বিক্রি
হচ্ছে এবং ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে রপ্তানি হচ্ছে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান।
সরেজমিন দেখা যায়, এলাকাজুড়ে খটখট শব্দে তাঁতের কাজ করে চলেছেন শ্রমিকরা। তাঁতমালিক আবদুল কাদের
জানান, প্রত্যেক বাড়িতে ১০ থেকে ২৫টি তাঁত মেশিন রয়েছে। মালিক-শ্রমিক
মিলে প্রায় ২৫ হাজার লোক এ পেশার
সঙ্গে জড়িয়ে সচ্ছল জীবন যাপন করছেন। শ্রমিকরা জানান, তারা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা
রোজগার করছেন একেকজন শ্রমিক।
তথ্য সূত্রঃ