রবীন্দ্রনাথ বিরোধিতার কাহিনী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ❑ জিয়াউদ্দীন আহমেদ

রবীন্দ্রনাথ বিরোধিতার কাহিনী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

জিয়াউদ্দীন আহমেদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯২০ সনে ভারতীয় বিধানসভায় গৃহীত হলে প্রায় ৬০০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ১৯২১ সনের ১ জুলাই থেকে শুরু হয়; ১ জুলাই, ২০২১ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শতবর্ষ আয়ুর গৌরব অর্জন করছে।১৯০৫ সনে বঙ্গভঙ্গ হওয়ার পর পূর্ববঙ্গ ও আসামের জনগণের মধ্যে একটা নতুন আশা ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়, কলকাতা কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ছিটেফোঁটা পাওয়ার প্রত্যাশা তাদের মধ্যে জাগে।কিন্তু বঙ্গমাতার এই বিভাজন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ অনেকে মানতে পারেননি।এখন যেমন নরেন্দ্র মোদির কাশ্মীর বিভাজন কাশ্মীরের মুসলমানেরা মানতে চাচ্ছে না, আমরা যেমন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে দুইভাগে বিভক্ত করাকে পছন্দ করিনি, তেমনি বাঙলাকে ভাগ করা তখনকার দিনে অনেকে মানতে পারেননি।যারা মানতে পারেননি তাদের সখ্যতা ইংরেজ শাসকদের সাথে বেশী থাকায় ১৯১১ সনে বঙ্গভঙ্গ রদ হয়ে যায়।এই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন।১৯২১ সনে চালু হওয়া আমাদের এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিরোধিতা করেছেন বলে ইদানীং বেশ প্রচার প্রচারণা পাচ্ছে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক জনপ্রিয় হয়ে উঠায় প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে পক্ষ-বিপক্ষ তাদের নিজস্ব ধ্যান-ধারণা প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করার লক্ষ্যে ১৯১২ সনের ২৮ মার্চ কলকাতার গড়ের মাঠে অনুষ্ঠিত একটি সভায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সভাপতিত্ব করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।ইসলামী ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত একটি প্রকাশনায় একজন অপরিচিত লেখক এই অভিযোগ বাংলাদেশে প্রথম শুরু করেন।কিন্তু লেখক এই তথ্যটি কোথায় পেয়েছিলেন তার কোনো সূত্র বইটিতে উল্লেখ করেননি।একইভাবে তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবঃ) আব্দুল মতিন তার ‘আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিকতা এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কথা' নামের বইয়ে রবীন্দ্রনাথের গড়ের মাঠের সভায় সভাপতিত্ব করার কথা উল্লেখ করলেও তার সূত্র সম্পর্কে তিনি নিরবতা পালন করেন।দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় আলী নিয়ামতের একটি লেখাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিরোধিতার কথা উল্লেখ করা হয়; এনটিভি’র একটি অনুষ্ঠানে একই কথার উচ্চারণ করেন দি নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীর।ড. নীরদ বরণ হাজরার কলকাতা ইতিহাসের দিনলিপিতে শুধু ২৮ তারিখের সভা নয়, একই উদ্দেশ্যে কলকাতা টাউন হলে অনুষ্ঠিত আরেকটি সভায়ও নাকি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সভাপতিত্ব করেছেন মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিরোধিতা করার ব্যাপারে প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী নীরদ চন্দ্র চৌধুরীর ’Autobiography of an unknown indian’ গ্রন্থের উল্লেখ করে সম্প্রতি ফরহাদ মজহারের বক্তব্য সম্বলিত একটি ভিডিও ক্লিপ ফেইসবুকে প্রচার করা হয়েছে।ফরহাদ মজহার তার লেখা ‘রক্তের দাগ মুছে রবীন্দ্রপাঠ' বইটি রবীন্দ্রনাথের দোষ-ত্রুটি বের করার জন্যই লিখেছেন, কিন্তু তার এই বইতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে রবীন্দ্রনাথের বিরোধিতার কথা উল্লেখ নেই; ররীন্দ্রনাথের দোষ-ত্রুটি উল্লেখ করে লেখা বইতে তিনি কেন রবীন্দ্রনাথের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করার কথা বললেন না তার কোন ব্যাখ্যা তিনি কোথাও দেননি।পরে আবেগময় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি নীরদচন্দ্র চৌধুরীর যে বইটির আশ্রয় নেন সেই বইটিতে নাকি রবি ঠাকুরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধাচরণের কোন কথা নেই।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিরোধিতার প্রমাণ হিসেবে সবাই শুধু ২৮ মার্চের গড়ের মাঠে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করার ঘটনাকেই উল্লেখ করে থাকেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ডাকসু কর্তৃক আয়োজিত ও ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে অতি সম্প্রতি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ উল্লেখ করেন যে, কলকাতার রাইটার্স আরকাইভস-এর নথিতে ২৮ মার্চে সভা অনুষ্ঠানের নিমিত্তে অনুমোদন দেয়ার কোন তথ্য না থাকায় স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়, উক্ত তারিখে এ ধরনের কোন সভা হয়নি।অনুমোদন ছাড়া যদি সভা হয়েও থাকে তাতেও যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন না তা প্রমাণ করতে অঙ্ক কষতে হয় না।রবীন্দ্রনাথ ঐ সভায় সভাপতিত্ব করেছেন, অথচ কিছু বলেননি এমন হওয়ার কথা নয়।তিনি সভায় কী বলেছেন তা কিন্তু কোন সমালোচক আজ পর্যন্ত উপস্থাপন করেননি, এমন কি পরের দিনের পত্রিকায় সভা এবং সভাপতি সম্পর্কে একটি কথারও উল্লেখ নেই।রবীন্দ্রনাথের সভাপতিত্বে কোন সভা হলে সেই সভা সম্পর্কে পত্রিকায় খবর থাকবে না- এমনটা তাঁর ঘোর শত্রুও চিন্তা করেন না।কারণ কোন সভায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপস্থিতির একটি ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ২৮ মার্চে কলকাতায় ছিলেন না এবং কলকাতায় না থাকলে উল্লেখিত সভায় সভাপতিত্ব করার প্রশ্নও আসে না।হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় রবীন্দ্রনাথ তাঁর বিলেত যাওয়া কর্মসূচী বাতিল করে ১৯১২ সনের ২৪ মার্চে বিশ্রাম নিতে শিলাইদহে চলে আসেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১১ চৈত্র বা ২৪ মার্চে শিলাইদহে গমনে খরচের হিসাব ঠাকুরবাড়ীর ক্যাশ বইতে ৩৭৯ নম্বর ভাউচারে উল্লেখ রয়েছে।২৫ মার্চে তিনি মৌচাক পত্রিকার সম্পাদক সুধীরচন্দ্র সরকারের ভগ্নী কাদম্বিনী দত্তকে লিখেন, ‘এখনো মাথার পরিশ্রম নিষেধ। শিলাইদহে নির্জনে পালাইয়া আসিয়াছি’।২৮ মার্চ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি শিলাইদহে অবস্থান করে ১৮টি গান ও কবিতা লেখেন।প্রশান্ত কুমার পাল রবিজীবনী গ্রন্থের ষষ্ঠ খণ্ডে উল্লেখ করেছেন, রবীন্দ্রনাথ ২৮ মার্চ, ১৯১২ বা ১৫ চৈত্র, ১৩১৮ তারিখে শিলাইদহে বসে লিখেছেন, ‘স্থির নয়নে তাকিয়ে আছি’।এই সময়ে শিলাইদহে অবস্থান করে ১৪ চৈত্রে লিখেছেন ‘আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ’।শিলাইদহ থেকে কলকাতা গিয়ে সভায় সভাপতিত্ব করে আবার একই দিনে শিলাইদহে ফেরত আসার আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা তখন ছিলো না।

রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে থাকলে তাঁকে কেন পাঁচ বছর পার না হতেই ১৯২৬ সনে দাওয়াত করে এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাঁকজমকপূর্ণ সংবর্ধনা দিলো তার কোন ব্যাখ্যাও রবীন্দ্র বিরোধীদের কাছ থেকে পাওয়া যায় না।এই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবার আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁর অনুপস্থিতিতেই তাঁকে ১৯৩৬ সনে ‘ডি লিট’ উপাধিতে ভূষিত করে।আরও আমোদজনক বিষয় হচ্ছে, যে নবাবদের প্রচেষ্টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেই নবাব পরিবারে রবি ঠাকুরের আদর-আপ্যায়ন ছিলো অতুলনীয়।শুধু নবাবদের আথিয়েতা নয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢাকার যেখানে গিয়েছেন সেখানেই তিনি পুষ্প বৃষ্টিতে আপ্লুত হয়েছেন।সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে মুসলিম ছাত্রদের কর্তৃক প্রদত্ত সংবর্ধনা প্রসঙ্গে অধ্যাপক আবুল ফজল লিখেছেন, ‘আমি আমার জীবনে ওরকম দ্বিতীয় সম্বর্ধনা দেখিনি- দেখিনি অতখানি আন্তরিকতা’।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য নারায়ণগঞ্জ স্টিমারঘাট লোকে লোকারণ্য হয়ে গিয়েছিলো।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ যদি সত্য হতো তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতাদের জীবিতকালেই তাঁকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে এনে সংবর্ধনা আর উপাধি দেয়ার কথা নয়, বাঙ্গালীর চিরায়ত প্রতিরোধ স্পৃহা থেকে কালো পতাকা দেখানোর কথা।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও সাধারণ লোক ছিলেন না; জমিদারের আভিজাত্য ছাড়াও তখন তিনি কবি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত, আত্মসম্মানবোধ বিকিয়ে দেয়ার লোক তিনি নন।এই ঘটনার এক বছর পরই তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করলে তিনি নিশ্চয়ই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণ নিয়ে তাদের দেয়া উপাধি সানন্দ চিত্তে গ্রহণ করতেন না।’দুর্ভাবনা ও ভাবনা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে’ বইয়ে ডঃ আকবর আলি খানও একই কথা বলেছেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করে প্রফেসর রফিকুল ইসলাম ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশি বছর’ নামে যে বই লিখেছেন তাতেও রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে এই ধরনের কোন অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি।লেখক এবং গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ তার 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা' বইয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতাকারী হিসেবে রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উত্থাপন করেননি।বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলেনর অন্যতম পুরোধা কাজী মোতাহার হোসেনেরও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস নিয়ে লেখা আছে, কিন্তু তাঁর লেখায়ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিরোধিতা করার কোন কথার উল্লেখ নেই।ড: আহম্মদ শরীফ রবীন্দ্রনাথের প্রজা উৎপীড়নের কথা বলেছেন, কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলেন এই কথাটি কোথাও বলেননি।ড. আহমেদ শরীফ এবং কাজী মোতাহার হোসেন পন্ডিত ব্যক্তি এবং কাঠখোট্টা, কাউকে ছেড়ে কথা বলার লোক ছিলেন না।সর্বোপরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতার সংবাদাদি সে সময়কার পত্রিপত্রিকায় পাওয়া গেলেও কোথাও রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতার কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা হয়েছিলো এবং যারা বিরোধিতা করেছিলেন তাদের মধ্যে হিন্দু, মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের লোক ছিলেন।কলকাতা হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট ড. রাসবিহারী ঘোষের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ভাইসরয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা সম্বলিত একটি স্মারকলিপি পেশ করেন।যার বিরোধিতা সবচেয়ে বেশী দৃষ্টিকটু ছিলো তিনি হচ্ছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যার আশুতোষ মুখার্জী, যিনি আবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘনিষ্ঠতম আত্মীয়।তার আশঙ্কা ছিলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হলে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বরাদ্দ কমে যাবে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি অধ্যাপকের পদ সৃষ্টির আশ্বাসের প্রেক্ষিতে স্যার আশুতোষ মুখার্জীর বিরোধিতা পরবর্তীতে সহায়তার ভূমিকায় রূপান্তরিত হয়।ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় হলে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের কোনো লাভ নেই বিধায় মৌলানা আকরাম খাঁ এবং ব্যারিস্টার আবদুর রসুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলেন।মুসলিম লীগ নেতা, কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী আবদুর রসুলের ‘দি মুসলিম’ পত্রিকার ভাষ্যমতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবী ‘শিক্ষাগত বিভাগ' সৃষ্টি করে পূর্ব ও পশ্চিম বাঙলার মধ্যে বিচ্ছিন্নতা বৃদ্ধি করবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী এবং শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকদের পাশাপাশি পূর্ব বাংলার হিন্দু সমাজপতিরাও এগিয়ে এসেছিলেন।ঢাকার বলিয়াদির জমিদার জগন্নাথ রায় চৌধুরীর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জগন্নাথ হল ও জগন্নাথ কলেজের নামকরণ করা হয়; নবাব স্যার সলিমুল্লাহর নামানুসারে করা হয় সলিমুল্লাহ মুসলিম হল।নবাবদের এত অবদান থাকা সত্বেও তাদের নিয়ে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম না করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীগণ রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বেশী মেতে থাকায় ডানপন্থী একদল বুদ্ধিজীবী সত্যাসত্যের অনুসন্ধান না করেই রবীন্দ্র বিরোধী প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।পাকিস্তান আমল থেকে চলমান এই বিরোধিতা স্বাধীনতা লাভের পর কিছুদিন বন্ধ ছিলো, এখন আবার শুরু হয়েছে।কিন্তু তাদের বোধোদয় হচ্ছে না যে, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিরুদ্ধে আক্রমনাত্মক অসত্য ও তথ্য-সূত্রবিহীন সমালোচনায় তিনি আরও বেশী গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছেন

লেখক

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক

ও সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশনের

সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক

ahmedzeauddin0@gmail.com

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

সহিদুলের লেখা