ইংল্যান্ডের রানীও খেয়েছিলেন মানিকগঞ্জের হাজারী গুড়


মানিকগঞ্জ নিউজ ২৪ ডটকম:


প্রায় দেড়শত বছর আগের হাজারী গুড়ের সুনাম আজো টিকিয়ে রেখেছে দেশের একমাত্র হাজারী গুড় ৎপাদনকারী জেলা মানিকগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী হাজারী পরিবারসহ শতাধিক গাছী পরিবারমানিকগঞ্জের দুটি দ্রব্যের সুনাম এক সময় এশিয়া থেকে ইউরোপ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। সে দুটি হচ্ছে তিল্লির দই অপরটি ঝিটকার ঐতিহ্যবাহী হাজারী গুড়। এই গুড়ের সুনাম এক সময় দেশ থেকে এশিয়া, ইউরোপ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। এমনকি ইংল্যান্ডের রানীকেও এই গুড় উপহার হিসেবে পাঠানো হত বলে লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে
বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতেই শুধু খেজুরের চাষ হয়ে থাকে। এসব খেজুর গাছের দ্ইু তৃতীয়াংশই রয়েছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায়। সেখানে প্রতি একরে ১৫টি খেজুর গাছ দেখা যায়। হরিরামপুরের ঝিটকা খেজুর গুড় শিল্পের প্রধান কেন্দ্র। গুণে মানে, স্বাদে গন্ধে এই গুড়ের বিস্তর সুনাম রয়েছে
মানিকগঞ্জে শীত মৌসুমে খেজুর গাছ একটা শিল্পে পরিণত হয়। রস-গুড় ৎপাদনে পেশাদার গাছি, কুমার, কামার, জ্বালানী ব্যবসায়ী, পরিবহনের জন্য ট্রাক মালিক, চালক, ভ্যান চালক, শ্রমিক আড়তদারসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ সংয্ক্তু হয়ে থাকে
এই গুড় প্রথম আবিস্কার করেছেন মিনহাজউদ্দিন হাজারী। তার নামেই এই গুড়ের নামকরণ করা হয়েছেহাজারী গুড় হাজারী গুড়ের একটি লক্ষনীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে দুহাতে গুড়ো করে ফুঁ দিলে তা ছাতুর মত উড়ে যায়
দাদার আমল থেকে গুড় ৎপাদন করে আসা গাছী আজমত আলি হাজারী (৬৫) জানান, ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এই গুড় ৎপাদনের নির্ভরযোগ্য সময়। আগের দিন বিকেলে গাছ কেটে হাড়ি বেঁধে দেয়া হয়। পরদিন ভোরে (সূর্য উঠার আগে) রস সংগ্রহ করে পরিস্কার করে ছেঁকে মাটির তৈরি (জালা) পাত্রে চুলায় (বাইনে) জ্বালিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় হাজারী গুড়। এই পদ্ধতি এখন আর হাজারী পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। প্রায় গাছিদের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে। এই গুড় দেখতে যেমনি সুন্দর খেতেও তেমনি সুস্বাদু। মিষ্টি টল টলে রস ছাড়া হাজারী গুড় হয় না। প্রতিকেজি গুড় ৬শ টাকা থেকে হাজার টাকা পর্যন্তও বিক্রি হয় বলে তিনি জানান


একই গ্রামের গাছি হযরত আলী জানান, বাজারে এক ধরনের হাজারী সুদৃশ্য গুড় পাওয়া গেলেও মৌলিকভাবে তার ব্যবধান রয়েছে। এক শ্রেণির অসাধু গুড় তৈরিকারক সাদা রংয়ের গুড়ের উপর হাজারী গুড়ের নাম খোদাই করে বাজারজাত করে সাধারন ক্রেতাদের ধোঁকা দিচ্ছে
নানা প্রতিকূলতায় মানিকগঞ্জের স্বনামধন্য ঐতিহ্যবাহী হাজারী খেজুরের গুড় প্রায় বিলীন হতে চলেছে। প্রতি বছর হাজার হাজার গাছ কেটে ইট ভাটায় লাকড়ি হিসেবে পোড়িয়ে এই গুড় শিল্পকে ধ্বংস করা হচ্ছে। সরকারিভাবে উদ্যোগ নিয়ে এই শিল্পকে রক্ষা করা জরুরি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ

http://www.manikganjnews24.com/?p=793

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

সহিদুলের লেখা